কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে মতিউর রহমান (৫৫) নামে এক হোটেল কর্মচারীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের সুলতান নগর গ্রামের পূর্বপাড়া ডোবারপাড় গোরস্তান থেকে তাঁর শরীরের কোমর থেকে মাথা পর্যন্ত অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মতিউর রহমান সুলতান নগর গ্রামের মৃত তাহের উদ্দিনের ছেলে।
জানা গেছে, স্থানীয় মরিচখালি বাজারে বন্ধু সুলতান নগর গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে হারেছ মিয়ার হোটেল কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন মতিউর।
তাঁর প্রথম স্ত্রী সাত বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। গত শুক্রবার গাংগাটিয়া গ্রামে দুলেনা খাতুন নামে আরেক নারীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর মঙ্গলবার একটি ফোন পেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হন মতিউর। এর তিন দিন পর একটি কবরস্থানে তাঁর শরীরের অর্ধেক অংশ অর্ধগলিত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
খবর পেয়ে করিমগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. ইফতেখারুজ্জামান, ওসি শামসুল আলম সিদ্দিকী ও পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
করিমগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মরদেহের পা থেকে কোমর পর্যন্ত বাকি অংশের সন্ধান করছে পুলিশ। মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত অংশ অনেকটা বিকৃত হয়ে গেছে। লাশ মোটামুটি শনাক্ত, তবু একেবারে শতভাগ নিশ্চিত হতে ক্রাইমসিনের লোকজন ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। এ ঘটনায় কেউ আটক হয়নি। আইনি অন্যান্য প্রক্রিয়া চলমান।
এলাকাবাসী জানায়, তাঁর আগের স্ত্রীর ঘরের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তাঁরা সবাই আলাদা আলাদা থাকে। নিঃসঙ্গতা কাটাতে তিনি গত শুক্রবার পাশের গাংগাটিয়া গ্রামের প্রায় ৫০ বছর বয়সী দুলেনা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে তিনি শ্বশুরবাড়িতে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন। মাঝেমাঝে নিজের বাড়িতে যেতেন।
স্ত্রী দুলেনা খাতুন জানান, মঙ্গলবার মতিউর রহমান তাঁর নিজ বাড়ি সুলতান নগর যান। সেখান থেকে বিকেল বেলা বের হয়ে সন্ধ্যার দিকে তাঁর কাছে আসেন। সন্ধ্যার পর তাঁর বন্ধু হোটেল মালিক হারেছ তাঁকে ফোন করলে তিনি বের হয়ে যান। এরপর থেকে তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
এলাকাবাসী ও স্ত্রীর অভিযোগ, তিনি যার দোকানে কাজ করতেন এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। কারণ গত তিন ধরে হারেছের দোকানটিও বন্ধ। তাঁকে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো কারণে হারেছের সঙ্গে তাঁর বিরোধ সৃষ্টি হতে পারে। আর এর জেরে হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। এলাকাবাসী জানায়, গত ১০-১২ বছর ধরে হারেছের ভাতের হোটেলেই তিনি কাজ করতেন। তাঁরা দীর্ঘদিনের বন্ধু ছিলেন।
তবে পুলিশ এ বিষয়ে কিছু বলেনি। পুলিশ কেবল বলছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এতে কারা জড়িত- তা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। মামলা না হলেও হত্যাকাণ্ডের নানা দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আর লাশের বাকি অংশ উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ