Header Ads Widget

Responsive Advertisement

মানুষ সৃষ্টিকুলের সেরা জীব


জ্ঞানতাপস ইউসুফ আল কারযাবী মিসরের এক কিংবদন্তি গবেষকের নাম। ‘মানুষের মর্যাদা’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধে তিনি লেখেন, মানুষ কে? কী তাদের পরিচয় ও মর্যাদা? পৃথিবীতে তারা কেন এলো? কোথায় তাদের গন্তব্য? কী তাদের দায়িত্ব? তারা তো অন্যান্য সৃষ্টির মতো নয়। তারা হলো বিপুল সম্ভাবনাময় দায়িত্বশীল এক স্বনির্ভর জাতি। মহান স্রষ্টা আল্লাহতায়ালার প্রতিনিধি। পৃথিবীর সবকিছু তাদের কল্যাণে সৃষ্ট। সমগ্র সৃষ্টি তাদের অধীনস্থ ও অনুগত।

মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘আর তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন যা আছে নভোমন্ডলে এবং যা আছে ভূমন্ডলে, তার পক্ষ থেকে। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নির্দেশনাবলি রয়েছে।’ (সুরা আল জাসিয়াহ-১৩)

অপর আয়াতে তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমি নিশ্চয়ই আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদের স্থলে এবং জলে চলাচলের বাহন দান করেছি, তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।’ (সুরা বনি ইসরাইল-৭০)
বিদায় হজের ভাষণে মানুষের সম্মান ও মর্যাদার কথা উল্লেখ করে রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের জান, তোমাদের মাল, তোমাদের সম্মান, এ (হজের) মাস, এ শহর, এ দিনের মতো মর্যাদাসম্পন্ন। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

আল্লাহতায়ালা মানব জাতিকে সুন্দরতম অবয়বে সৃষ্টি করেছেন। মানুষের মর্যাদার সৌধ হিসেবে ফেরেশতাদের প্রতি প্রথম মানব আদম (আ.)-কে সিজদা করার নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। প্রতিটি মানুষকে আল্লাহতায়ালা আপন আপন অবস্থান অনুযায়ী নিজস্ব অধিকার নিয়ে বাঁচার অধিকার প্রদান করেছেন।

মানুষের এ মর্যাদা কেন? কী কারণে তাদের এত মূল্যায়ন? তা শুধু আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন। যা সম্পর্কে ফেরেশতারাও অভিহিত নয়। কোরআনে কারিমের মাধ্যমে মানব জাতিকে তিনি অবগত করেছেন, মানুষের মর্যাদার মূল রহস্য হলো- তারা এ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী তারা এ পৃথিবীতে মহান আল্লাহর বিধি ও বিধান নিজে পালন করবে এবং অপরের মধ্যে তা বাস্তবায়নে আত্মনিয়োগ করবে।

তিনি ঘোষণা করেন, ‘আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদের বললেন, আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি।’ (সুরা আল বাকারা-৩০)। অপর আয়াতে তিনি ইরশাদ করেন- ‘আমার ইবাদত করার জন্যই মানব এবং জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।’ (আয যারিয়াত-৫৬)

বস্তুত মানুষ সর্বোচ্চ দায়িত্ববান হওয়ার কারণেই সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী। তাই এ মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য মানুষকে তার দায়িত্বে সচেতন হওয়া জরুরি। জরুরি খোদা প্রদত্ত যাবতীয় বিধিবিধান বাস্তবায়নে যত্নবান হওয়া। মর্যাদা ও অধিকারের ক্ষেত্রে জন্মগতভাবে সব মানুষ সমান। তবে আল্লাহতায়ালার বিধিবিধান ও আদেশ-নিষেধ পালনে যে যত বেশি অগ্রগামী হবে, তার মর্যাদা আল্লাহর কাছে ততই অধিক হবে।

তিনি ঘোষণা করেন, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পার। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্য থেকে সে-ই সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে সর্বাধিক পরহেজগার।’ (সুরা আল হুজরাত-১৩)

 

এনএএন টিভি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ