কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নে নুরুল কবির (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে বাড়ির ভেতর ঢুকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। একই সঙ্গে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে নিহতের এক সন্তানকেও। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে ওই বাড়িতে। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। নিহত নুরুল কবির ওই এলাকার জেবর মুল্লুকের পুত্র।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ সরওয়ার জানান, মাতারবাড়ির বাংলা বাজার এলাকায় পাবলিক স্কুলের পাশে একটি পুকুর ও পুকুরের পাড়ের জমি নিয়ে স্থানীয় দুইটি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধ অন্তত ৩০-৪০ বছরের পুরোনো। পুকুরের পাড়ে রয়েছে দুইটি বাড়ি, বাড়িগুলো ভাড়া দেওয়া হয়। সম্প্রতি এই বাড়ির ভাড়াগ্রহণ নিয়ে দুইপক্ষ বিরোধে জড়িয়ে পড়ে।
এই বিরোধের সূত্র ধরে শুক্রবার রাতের প্রথমার্ধে আয়ুব আলী নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করে প্রতিপক্ষ। ওই লোক আহত হলেও পুলিশ ও জনপ্রতিনিধের কাছে কোনো তথ্য না দিয়ে অনেকটা গোপনে রাতের আধারে তাকে চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হামলায় ওই ব্যক্তির একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়লেও হাত বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়টি কতোটুকু সত্য তা জানা যাচ্ছে না। তাদের কেউই এলাকায় নেই।
এ দিকে এ ঘটনার কিছু সময়ের ভেতরই আহত আয়ুব আলীর আত্মীয় স্বজন দলবল নিয়ে এসে আয়ুব আলীর উপর হামলার অভিযোগে প্রতিপক্ষের নুরুল কবির নামের এক ব্যক্তির বাড়ি ভাংচুর করতে থেকে। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা বাড়ির দরোজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে এবং বাড়ির লোকজনকে খুঁজতে থাকো। এ সময় পর পর বাড়ির দুইটি দরোজা ভেঙ্গে বাড়ির তৃতীয় কক্ষে ঢুকে বাড়ির মালিক নুরুল কবিরকে নির্মম ভাবে কুপিয়ে খুন করে। তার মাথাতেই কোপানো হয়।
একই সঙ্গে বাড়িতে থাকা নিহত নুরুল কবিরের পুত্র নুরুল আবছারকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়, তার অবস্থাও সংকটাপন্ন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হামলাকারীরা নিহত নুরুল কবির এর বাড়ি ভাংচুর করে, মালামাল লুটপাট করে নুরুল কবিরকে খুন করে নিরাপদে এলাকা ত্যাগ করে। রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মহেশখালী থানার আওতাধীন মাতারবাড়ি পুলিশ বিটের নির্বাহী এসআই হাসান জানান, ঘটনার খবর পেয়েই মাতারবাড়ি পুলিশ বিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। কিছু সময়ের মধ্যে পুলিশের মহেশখালী সার্কেলের এএসপি এবং মহেশখালী থানার ওসির নেতৃত্বে আরও একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
পুলিশ লাশ উদ্ধারসহ পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে এগোচ্ছে বলে জানান তিনি।
0 মন্তব্যসমূহ